এশিয়াতে ফেব্রুয়ারী এলেই যেন একটা ফুরফুরা ভাব চলে আসে। বাতাসে বহে প্রেম, বসন্ত এসে যায়, মিষ্টি একটা গন্ধ ছড়িয়ে যায় পুরো প্রকৃতি জুড়ে। এর ঠিক উল্টো টাই হয় নর্থ আমেরিকা তে বিশেষ করে কানাডা তে।

আমার বসবাস কানাডার এডমন্টন শহর এ যেটা কিনা বছরের অন্তত ছয় মাস বরফে ঢাকা থাকে, নয় মাস জুড়ে থাকে ঠান্ডা ঠান্ডা কুল কুল ওয়েদার। এডমন্টন এর কাছাকাছি আরেকটা শহর ভ্যানকুভার যেখানে কিনা স্নো পরে না বললেই চলে বরং মাঝে মাঝে দেখা মেলে বৃষ্টি সাথে মেঘলা দিন।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি তে হঠাৎ প্লান করলাম একটু ডিফরেন্ট আবহাওয়া এনজয় করি। আর সেই এনজয় টা যদি হয় ত্রিশ বছরের পুরোনো বন্ধুর সাথে তাহলে তো এই সব ঠান্ডা শীত বৃষ্টি সব কুপোকাত হতে বাধ্য! যেই ভাবা সেই কাজ! বাক্স পেট্রা নিয়ে আকাশযানে ছুটলাম ভ্যানকুভার এর পথে। কিন্তু বাপরে বাপ -ওঁদের প্লাস ওয়েদার এ ও যে ঠান্ডা আমাদের এডমন্টন এর মাইনাস এ ও এত্ত ঠান্ডা না। তবু ও বন্ধুত্বের উষ্ণতা আর ভালোবাসায় ঠান্ডা ঠান্ডা কোল্ড কোল্ড পরিবেশ ও আনন্দময় হয়ে গেল।

বেশ কিছু যায়গায় ঘোরাঘুরি হয়েছে। তবে আমার বেশ মজা লেগেছে এদের ফিশিং এন্ড হান্টিং শপস্ এ যেয়ে। Richmond এর Tsawwassen এ শপগুলোতে এ ঢুকলে আপনার মনে হবে ছোটখাট একটা বন্য জগতে চলে এসেছেন। ঢুকতেই কিউট একটা ভাল্লুক আপনাকে স্বাগত জানাবে। বিশাল বড় একুরিয়ামের নানা রঙের মাছগুলো যেন লোকজন দেখলে খুশি তে নেচে ওঠে। হঠাৎ আপনার চোখ চলে যাবে ঐ দুরে মাথার ওপরে শয়ে শয়ে গাঙচিল কিংবা চিলেরা উড়ে যাচ্ছে কোথায় যেন । ছাদের দুই ধারে দাঁড়িয়ে অলস সময় কাটাচ্ছে যেন হরিন, ষাঁড়, হরিন কিংবা অন্য কোন কানাডিয়ান প্রানী।

একটু হাঁটলে ই দেখবেন লাইন দিয়ে হরিনের সব মাথা দেয়ালে আটকে আছে। মাছেরা ও রয়েছে তাঁদের সাথে। পুরো পরিবেশ জুড়ে ই একটা অন্য রকম আহ্বান প্রকৃতির কাছে যাওয়ার জন্য। এখানে মাছ ধরার, শিকারে যাওয়ার কিংবা সামারে ক্যাম্পিং করার প্রয়োজনীয় সব সরঞ্জামাদি রয়েছে।

এখানে ঢুকলে আপনার মন চাইবে ইট পাথরের দালান ছেড়ে কয়েকদিন এর জন্য দুরে কোথাও প্রকৃতির কাছাকাছি ঘুরে আসি মাছ ধরতে কিংবা শিকার করতে অথবা শুধু মাত্র হাইকিং করার জন্য হলেও ক্যাম্পিং করতে।

প্রকৃতি আর তাঁর প্রানীগুলো সকলেই ভালো থাকুক।