দেশ ছেড়েছি পাঁচ বছরের উপরে। এই পাঁচ বছরে দেশে এসেছি তিনবার। কিন্তু প্রতিবারই দেশে আসি নানান ঝামেলা জনক কাজকর্ম নিয়ে। বেড়ানো যাকে বলে তা আর হয় না। তাই এবার ঠিক করলাম, যত ব্যাস্ততাই থাকুক অল্প সময়ের জন্য হলেও ঢাকার বাইরে যাবো।
 
বন্যা, রাস্তার অবস্থা ইত্যাদি চিন্তা করে ঠিক হলো সিলেটের দিকে যাই। সিলেটের কথা উঠতেই সবাই বলল, প্যালেস, দুসাই বা গ্র্যান্ড সুলতানের কথা। এখন নাকি এইগুলাই সবথেকে ভালো। শুরু করলাম খোঁজ খবর। এমন সময় ফেসবুকে আনাগোনা শুরু করলো ফায়জাবাদ হিলস টি রিসোর্টের কিছু পোস্ট। আগ্রহ থেকে আরেকটু জানলাম। যা বুঝতে পারলাম তা হলো এটা খুব হাই এন্ড কিছু না। কিন্তু একদম চা বাগানের ভিতরে। সাত পাঁচ চিন্তা করে বুক করে ফেললাম। 

জায়গাটা ঢাকা থেকে মানে উত্তরা থেকে চার ঘন্টার পথ। কিন্তু হাইওয়ের যে দুর্দশা, ঘন্টা দুয়েক পর একটা ব্রেক না নিলেই না। মাঝপথে বেশ কিছু হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট আছে। সেখানে মিনিট বিশেক রেস্ট নিয়ে, চা পানি খেয়ে আবার দুই ঘন্টা ড্রাইভ করে পৌঁছে যাওয়া যাবে ফাইজাবাদ হিলস টি রিসোর্ট। ফিনলে চা বাগানের পাশেই। ছোট্ট দুইটা টিলা। তার উপরে থাকার ব্যাবস্থা। গতানুগতিক ধারার রিসোর্ট বা হোটেলের সাথে মিল খুঁজতে গেলে হোঁচট খাবেন। কিন্তু একদম ছোটবেলায় নানী দাদী বাড়িতে গেলে যে অভিজ্ঞতা হতো, তাতে যদি আপত্তি না থাকে তাহলে আমাদের মত অনেক এঞ্জয় করবেন।

 শ্রীমংগল শহর এই জায়গাটা থেকে মিনিট বিশেকের ড্রাইভ। কাজেই প্রতিবেলা খাবারের জন্য শহরে যাওয়াটা সুবিধাজনক না। ফায়জাবাদ হিলস টি রিসোর্টের নিজস্ব মেনু আছে। বুকিং এর সময়েই তারা এই মেনু আপনাকে পাঠিয়ে দিবে। এক দিন আগে মেনু কনফার্ম করে দিলে ওরা সুন্দর করে বাজার আর রান্না করে, ডাইনিং টেবিলে সাজিয়ে দিবে। রান্নাটা হয় লাকড়ির চুলায়। স্বাদ অতুলনীয়। রাতের বেলা আমরা বার বি কিউ করেছিলাম। আমরা করেছিলাম মানে ওরাই করে দিয়েছে। আমরা শুধু আনন্দটুকু করেছি।
আমাদের বাংলোতে দুইটা বেডরুম আর দুইটা বাথরুম ছিলো। দুই বেডরুমে ছয়জন মানুষ আরামে থাকতে পারবে। ডেংগুর সিজনে বেড়াতে গিয়ে দেখি সব ঘরে মশারীরও ব্যাবস্থা আছে।এছাড়াও ছিলো দুই রুমের মাঝখানে ডাইনিং, পিছন দিকে রান্নাঘর, যেখানে সবসময় কেউ না কেউ থাকবে হুটহাট চা’য়ের ফরমায়েশ রাখার জন্য, আর বাংলোর সামনে এক চিলতে বারান্দায় বসার ব্যাবস্থা।
 
মোট কথা খুব অস্বাভাবিক খরচ না করে একদম ছিমছাম, শান্ত পরিবেশে পরিবার বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে সময় কাটানোর জন্য অসাধারণ সুন্দর জায়গা। দেশে যারা আছেন তারা তো অবশ্যই, প্রবাসীরাও দেশে গেলে বিবেচনা করে দেখতে পারেন। আশা করি হতাস হবেন না।

পড়ুন নওশাবা রাজ্জাকের আরো লেখা

 

ঘুরুঞ্চি ম্যাগাজিনের সকল কর্মকান্ড নট ফর প্রফিট, স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণে সকল কাজ পরিচালিত হচ্ছে।

অত্যন্ত ভরাক্রান্ত মনে জানাতে হচ্ছে যে আমাদের সম্মানিত লেখকদের জন্য কোনো তহবিল এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই। অদূর ভবিষ্যতে তহবিল গঠন করতে পারা গেল এই অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।

 

ঘুরুঞ্চির ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে আমাদের সপ্তাহে ৮-১২ ঘন্টা কাজ করতে হয়। বর্তমানে আমাদের কাজ শুধুমাত্র স্বেচ্ছাসেবক এবং স্ব-অর্থায়নের উপর নির্ভর করে। আপনারা ঘুরুঞ্চিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে, অনুদান দিয়ে, স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সাহায্য করতে পারেন।

ঘুরুঞ্চির ভ্রমণ ছবি ব্লগের ছবি থেকে আপনার পছন্দসই ছবি পেপার প্রিন্ট, ফাইন আর্ট প্রিন্ট, ওয়াল আর্ট এবং ডেস্ক আর্ট হিসাবে কেনার ব্যবস্থা রয়েছে। আপনারা ছবি কেনাকাটা করলে আমরা অল্প পরিমাণ কমিশন পাব, যা ঘুরুঞ্চির ক্রমবিকাশ এবং সম্প্রসারে ব্যাবস্থার হবে, যা ঘুরুঞ্চির ক্রমবিকাশ এবং সম্প্রসারে ব্যবহার হবে।

আমরা আপনার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ।