চারটি ঋতুর দেশ অস্ট্রেলিয়া। এখানে প্রতিটি ঋতুর আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে, অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ অংশের স্টেটগুলোতে প্রতিটি ঋতুর পার্থক্য খুব সহজেই টের পাওয়া যায়। শরতের শেষভাগে কুয়াশার চাদর টেনে শীত চলে আসে।

অস্ট্রেলিয়া বেশ বড়ো সাইজের একটি দেশ হবার কারণে এখানে বেশ কয়েকটি জলবায়ু লক্ষ্য করা যায়। অস্ট্রেলিয়ার উত্তর অংশ ট্রপিকাল জলবায়ুর প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে বছরের বেশিরভাগ সময় গরম ও আদ্র আবহাওয়া বিরাজ করে এবং শীতে আবহাওয়া অনেকটা উষ্ণ এবং শুকনো থাকে। অন্যদিকে দক্ষিণে ঠিক তার উল্টো অর্থাৎ শীতের প্রকোপ এখানে অনেক বেশি। এ সময় মূলভূখণ্ডের পাহাড়ি অঞ্চল অস্ট্রেলিয়ান আল্পসে এবং তাসমানিয়াতে তাপমাত্রা -৫ থেকে -২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস এ নেমে ব্যাপক তুষারপাত হতে পারে।

ভ্রমণপিপাসু ঘুরুঞ্চিদের জন্য শীতকাল ঘুরাঘুরির জন্য সবচে ভালো সময়। সব স্টেটের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো জুনের শেষ সপ্তাহ থেকে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ বন্ধ থাকে। কাজেই এ সময় পরিবার বা বন্ধুরা মিলে কোথায় যাবেন তার পরিকল্পনা আগেভাগেই করে ফেলুন। যেহেতু এসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে কাজেই পরিকল্পনা না করে দূরে কোথাও গেলে থাকার জায়গা নাও পেতে পারেন। শীতকালের অন্যতম আকর্ষণ স্নো দেখতে যাওয়া। প্রাকৃতিক পরিবেশে স্নো দেখতে যাওয়া আর স্কি এক্সপেরিয়েন্স নিতে পারেন এমন কিছু জনপ্রিয় জায়গার নাম জানিয়ে রাখছি।

কিছু পরামর্শ:

  • স্নো দেখতে যাবার প্রস্তুতি হিসাবে – স্নো ক্যামেরায় এলাকাটি ভালো ভাবে দেখে নিতে পারেন।
  • পাহাড়ি পথে গাড়িতে টায়ার চেইন থাকা বাধ্যতামূলক, সেটা মাথায় রাখতে হবে।
  • ভেজা এবং পিছল রাস্তায় সাবধানে গাড়ি চালাবেন।

ভিক্টোরিয়া:

  • মাউন্ট বুলার
  • ফলস ক্রিক
  • মাউন্ট হথাম আলপাইন রিসোর্ট
  • মাউন্ট বোবোও
  • লেক মাউন্টেন
  • মাউন্ট ডোনা বুয়াং
  • মাউন্ট বাফালো ন্যাশনাল পার্ক

তাসমানিয়া:

  • মাউন্ট ওয়েলিংটন
  • ক্র্যাডল মাউন্টেন
  • বেন লমন্ড ন্যাশনাল পার্ক
  • মাউন্ট ফিল্ড ন্যাশনাল পার্ক
  • হার্টজ মাউন্টেন ন্যাশনাল পার্ক
  • সেন্ট্রাল হাইল্যান্ডস
  • ওভারল্যান্ড ট্র্যাক

নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ক্যানবেরা:

  • থ্রেডবো
  • পেরিশার
  • শার্লোট পাস
  • ব্লু মাউন্টেন

তবে শীত কালে যে শুধু স্নো এলাকাতেই যেতে হবে এমন কথা নেই। অনেকে স্নোবোর্ডিংএ অপারগতার কারণে স্কি রিসোর্টে যেতে চান না। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে বেড়ে ওঠা আমাদের অনেকেই স্নো এলাকাতে গিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। এছাড়াও স্কি রিসোর্ট অহেতুক ব্যয়বহুল।

শীত কালের সকালটা বেড়ানোর জন্য খুবই সুন্দর। ভোরের কুয়াশা ভেদ করে কোনো লেক, নদী বা ফাঁকা জায়গায় যেতে পারেন। কুয়াশায় আচ্ছন্ন সবকিছু দেখতে ভিন্নরকম মনে হয়। মনে হবে জনমানব শুন্য কোনো স্বপ্নের দেশে আছেন। বেলা গড়ালে কুয়াশায় আচ্ছন্ন সোন্দর্যটা পাওয়া যাবে না।

শীতকাল যেকোনো ঝর্ণা দেখবার সবচে ভালো সময়। এ সময় বৃষ্টি হয়, ঝর্ণার মূল উপাদান পানি। এই মৌসুমে পানির আধিক্য, আদ্রতা এবং স্যাতস্যাতে আবহাওয়া ঝর্ণার চারপাশ চক-চকে সবুজ করে তোলে। আপনার আসে পাশের কোনো ন্যাশনাল পার্ক বা খাড়ি থেকে থাকলে বেড়িয়ে আসতে পারেন।