হুট করেই প্ল্যান, মে মাসের শুরুতে লং উইকেন্ডে গোল্ড কোস্ট ঘুরে আসি। এর আগেও দুইবার গোল্ড কোস্টে যাওয়া হয়েছে তাই এইবার প্ল্যান ছিলো এমন কোথাও যাবো যেখানে আগে যাই নি। খুঁজে পেলাম স্প্রিংব্রুক ন্যাশনাল পার্ক।


আমরা ডারউইনের মানুষ সূর্যাস্ত নিয়ে ভীষণ প্রাউড। আসলেই এমন সুন্দর সূর্যাস্ত আমি আর কোথাও দেখি নি। কিন্তু সুর্যোদয় আমাদের জন্য বরই কঠিন। এই কারণেই ইচ্ছা ছিলো ভোরবেলা চলে যাবো। স্প্রিংব্রুক ন্যাশনাল পার্কের বেস্ট অফ অল লুক আউট থেকে নাকি খুব সুন্দর সূর্যোদয় দেখা যায়। আমরা ছিলাম সার্ফার্স প্যারাডাইজ। এখান থেকে ঘন্টাখানেকের পথ। তবে ফোরকাস্টে দেখলাম আকাশ থাকবে মেঘলা। বুঝলাম, সূর্যোদয় দেখা কপালে নেই। তাই আর তারাহুরো না করে আমরা সাতটার দিকে রওয়ানা দিয়ে লুকাউটে পৌঁছালাম আটটায়। সোয়া ছয়টার দিকে সূর্যোদয় হলেও পাহাড়ের উপরে আর ঘন গাছপালার মাঝে তখনো সূর্যের আলো পুরাপুরি এসে পৌঁছায়নি। ভেজা ভেজা, কুয়াশা মাখা, ঠান্ডা, আলো আধারে ভরা পথ। যদিও কার পার্ক থেকে লুক আউট মাত্র ৩৫০ মিটার, রাস্তাটা এতো সুন্দর সে এইটুকু পথও সময় নিয়ে যেতে ইচ্ছা করবে। শ্যাওলার (মস) মতো একটা সাধারণ জিনিসও যে আমি এতো মুগ্ধ হয়ে দেখবো, ভাবিনি।






আরো পড়ুন ব্যারন নদীতে ওয়াটার রাফটিং

লুক আউটের প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে আমরা পুরাই থ! এতো পুরাই মেঘে ঢাকা। সামনে সাদা ঘন মেঘ আর কুয়াশা ছাড়া কিচ্ছু নেই। আমরা থাকতে থাকতেই আরও দুই দল এসে রণে ভঙ্গ দিয়ে বিদায় হলো। আমরাও হয়তো চলেই আসতাম, কিন্তু সকাল বেলার নির্জনতা, গাছের পাতা থেকে শিশির পরার টুপটাপ শব্দ আর গাছের ফাঁক দিয়ে সূর্যকিরণ আমাদের মুগ্ধ করে রেখেছিলো। আমরা তাই কিছুক্ষণ সময় কাটালাম এখানে। এমন সময় যেনো জাদুর মতো মেঘটা কেটে গেলো। ঝকঝকে রোদ আর সামনে অসাধারণ দৃশ্য। বিশ্বাসই হচ্ছিলো না যে মাত্র মিনিট পনেরো আগেই সাদা চাদরের মতো মেঘ ছাড়া দেখার আর কিছু ছিলো না।





আরো পড়ুন ডেইন্ট্রি রেইন ফরেস্ট


সবশেষে গেলাম ন্যাচারাল ব্রিজ। এই জায়গাটা ক্যানিয়ন লুক আউট থেকে প্রায় চল্লিশ মিনিটের ড্রাইভ। তবে পৌঁছানোর পর ন্যাচারাল ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাটা মাত্র এক কিলোমিটারের মতো। সুন্দর করে ট্রেক তৈরি করা আছে। পাহাড়ের গড়নেই গুহার উপরটা একটা ব্রিজের মতো তৈরি হয়েছে আর সেই ব্রিজের উপরেই জলপ্রপাত তার যাওয়ার পথ করে নিয়েছে। ন্যাচারাল ব্রিজের নিচে গুহার মতো কুঠুরীটায় ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাসে সন্ধ্যা রাতে আসলে গ্লো ওয়ার্ম দেখা যায়। সেই দৃশ্য আমাদের কপালে জোটে নি, কিন্তু অন্ধকার, আলোছায়ায় জলপ্রপাতের ক্লান্তিহীন অবিরাম বর্ষণ উপভোগ করেছি ভীষণভাবে।

পড়ুন নওশাবা রাজ্জাকের আরো লেখা
ঘুরুঞ্চি ম্যাগাজিনের সকল কর্মকান্ড নট ফর প্রফিট, স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণে সকল কাজ পরিচালিত হচ্ছে।
অত্যন্ত ভরাক্রান্ত মনে জানাতে হচ্ছে যে আমাদের সম্মানিত লেখকদের জন্য কোনো তহবিল এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই। অদূর ভবিষ্যতে তহবিল গঠন করতে পারা গেল এই অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।
ঘুরুঞ্চির ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে আমাদের সপ্তাহে ৮-১২ ঘন্টা কাজ করতে হয়। বর্তমানে আমাদের কাজ শুধুমাত্র স্বেচ্ছাসেবক এবং স্ব-অর্থায়নের উপর নির্ভর করে। আপনারা ঘুরুঞ্চিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে, অনুদান দিয়ে, স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সাহায্য করতে পারেন।
ঘুরুঞ্চির ভ্রমণ ছবি ব্লগের ছবি থেকে আপনার পছন্দসই ছবি পেপার প্রিন্ট, ফাইন আর্ট প্রিন্ট, ওয়াল আর্ট এবং ডেস্ক আর্ট হিসাবে কেনার ব্যবস্থা রয়েছে। আপনারা ছবি কেনাকাটা করলে আমরা অল্প পরিমাণ কমিশন পাব, যা ঘুরুঞ্চির ক্রমবিকাশ এবং সম্প্রসারে ব্যাবস্থার হবে, যা ঘুরুঞ্চির ক্রমবিকাশ এবং সম্প্রসারে ব্যবহার হবে।
আমরা আপনার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ।