নামটা শুনলেই কেমন যেন রূপসী বা সুশ্রী কোন নারীর ছবি ভেসে উঠছে।
সত্যিকার অর্থেই আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় প্যাসিফিক ওশান (Pacific Ocean) এর পাশে বীচের ওপর গড়ে ওঠা একটা জম্পেশ চলমান আনন্দের ফোয়ারা যেন এই ছোট্ট শহর শান্তা মনিকা (Santa Monica)। লস এনজেন্লস এর ডাউনটাওন থেকে খানিকটা পশ্চিমে গেলেই আপনি দেখবেন সূর্যাস্তের সাথে সাথে যেন অগনিত মানুষের ঢল ছুটে চলেছে এক টুকরো কাঠের পাটাতনের ওপর! মনে হচ্ছে সেই আরিচা দৌলদিয়ার উপর দিয়ে পারাপারের ঐ ছোট্ট ফেরিটা হঠাৎ আমেরিকার এই বীচে এসে একটু সাইজে বড় হয়েছে আর নানা রঙের নানা বর্নের আনন্দ ফেরি করছে ওখানে স্হির হয়ে।




মেইন রোড থেকে ডানদিকে হাঁটতে শুরু করলে দেখা যাবে লম্বা কাঠের সাঁকো পেরিয়ে একদল লোক ফেরির ওপর মেলায় যাচ্ছে আরেক দল মেলা থেকে ঘরে ফিরছে। চারিদিকে মাইকে বিভিন্ন ভাষার গান বাজছে! সী ফুড, চিকেন ফ্রাই আরো কত নাম না জানা খাবারের সুঘ্রান বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। বাহারী জিনিসের পসরা সাজিয়ে খোলা আকাশের নীচে দোকান সাজিয়ে বসে আছে কেউ কেউ ।
সূর্যাস্তের কুসুম রঙের আভা রাতের অন্ধকারে মিশে সমুদ্রের রূপ কে কি যে এক মোহনীয় মায়ায় জড়িয়ে আছে। এত সৌন্দর্য আর মায়ায় ভরা রাত্রি। ঐ যে দুরে ফেরির ওপরে চলন্ত চাকার রাইড গুলো একবার নীল, অথবা সাদা কিংবা বেগুনি রঙে রঙিন হয়ে যাচ্ছে। হ্যামিলনের বাঁশি না বাজলেও সেতার এর সুরে হৃদয় আন্দোলিত হচ্ছে কারো কারো। স্ট্রিট ড্যান্সের দর্শক ও কিন্তু কম নাই ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দিচ্ছে।
আমার কাছে আমেরিকা কে একটা পাগল মানে ক্রেজি দেশ মনে হয় কিন্তু এই যে সারাদিন জীবনের তাগিদে ছুটে চলা শেষেও মনের তাগিদে তাঁরা যে আনন্দ কোলাহল উচ্ছ্বসিত জীবনে ও ছুটে চলে-আমি ওটাতেই আটকে গেছি। ছুটে চলার নাম জীবন না হলেও ছুটতে জানাটা ও জীবন বৈকি।