মেলবোর্নে ভিন্ন ধারায় ঘুরুঞ্চি ম্যাগাজিনের বিজয় দিবস উদযাপন

বিজয় দিবস প্রতিটি বাংলাদেশির কাছে এক অবিস্মরণীয় গৌরবময় দিন। সুদীর্ঘ নয় মাস পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত দেশের স্বাধীনতা, অশ্রুসিক্ত বেদনার রক্তাক্ত দলিল। মহান মুক্তিযুদ্ধ রচনা করেছে সাহস, প্রেরণা, সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, বীরত্ব এবং গৌরব অর্জনের ইতিহাস।
শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৩ মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে ঘুরুঞ্চি বাংলা ট্রাভেল ম্যাগাজিন (ISSN 2653-7486) আয়োজন করেছে এক ভিন্ন ঘরানার কর্মসূচি – “১৬ ডিসেম্বর, পায়ে হেঁটে ১৬ কিলোমিটার – মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া”। এই আয়োজনে মেলবোর্ন শহর থেকে অনতিদূরে ফেয়ারফিল্ড বোটহাউস থেকে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের পতাকা হাতে ১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মেলবোর্ন শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ফেডারেশন স্কোয়ারে উপস্থিত হন একদল প্রবাসী বাংলাদেশী।
অস্ট্রেলিয়ায় প্রতিবছর যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য এবং বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সাথে বিজয় দিবস পালন করা হয়। তবে এই আয়োজনগুলো মূলত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। বাংলাদেশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক দল স্মৃতিসৌধের আদলে নির্মিত অস্থায়ী সৌধে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বিজয় দিবস উদযাপন করে থাকেন।
মানুষকে প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে উৎসাহিত করা ও প্রকৃতি ভিত্তিক ভ্রমণে আগ্রহী করে তোলাই ঘুরুঞ্চি ম্যাগাজিনের উদ্দেশ্য। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে ঘুরুঞ্চি ম্যাগাজিন অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে নিয়মিত প্রকৃতি ভিত্তিক ভ্রমণ আয়োজন করে আসছে যা বাংলাভাষী প্রবাসীদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। সে ধারাবাহিকতায় বিজয় দিবস উদযাপনের বিষয়টিকে মাথায় রেখে ঘুরুঞ্চি ট্রাভেল ম্যাগাজিনের এই প্রায় হাফ ম্যারাথন দূরত্ব পথচলার আয়োজন সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী।
 
১৬ ডিসেম্বর, পায়ে হেঁটে ১৬ কিলোমিটার – মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া কর্মসূচিতে অংশ নেন ৭ জন বিভিন্ন বয়েসের বাংলাদেশী। অংশগ্রহণকারীরা হলেন মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, রাবেয়া তাসনিম, সাকিব খান, সালাহউদ্দিন আহমদ, উম্মে তাসলিমা আরজু এবং ১৩ বছরের নোমান আহমদ। আরো অনেকেই অংশগ্রহণে আগ্রহী হলেও শেষ পর্যন্ত নানা ব্যাস্ততায় আটকে গিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। অনুষ্ঠানের শুরুতে মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম, সালাহউদ্দিন আহমদ এবং নোমান আহমদ বাংলাদেশের পতাকা বহন করেন।
বিপুল উৎসাহে ভোর ৬:৩০ মিনিটেই পৌঁছে যান সবাই। সবার পরনেই ছিল লাল সবুজ জামাকাপড়। সকাল ৬:৫০মিনিটে ঘুরুঞ্চি ট্রাভেল ম্যাগাজিনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সবাইকে স্বাগত জানান এবং বিজয় দিবসের অভিনন্দন ব্যাক্ত করেন। সাতটা বাজতেই জাতীয় সংগীত গাইতে গাইতে বাংলাদেশের পতাকা হাতে নিয়ে ১৬ কিলোমিটার পথ যাত্রা শুরু হয়। 
বিভিণ্ণ বয়সী নারী পুরুষ এবং শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণের কারণে ৫ ঘন্টা সময় নির্ধারণ করা হয়। আয়োজন সুস্থভাবে সঞ্চালন করতে ১৬ কিলোমিটার পথকে নয় ভাগে ভাগ করা হয়। প্রতিটি ভাগকে মাস এবং জায়গার নাম মিলিয়ে নামকরণ করা হয়। সে অনুসারে, ফেয়ারফিল্ড বোটহাউস অর্থাৎ শুরুর স্থানটি নাম দেয়া হয় মার্চ। পরবর্তী অংশের নাম যথাক্রমে এপ্রিল – ডাইটস ফলস (Dights falls), মে – কলিংউড চিলড্রেন ফার্ম, জুন – কলিন্স ব্রিজ, জুলাই – ওয়ালমার্ স্ট্রিট ব্রিজ, অগাস্ট – বার্নলি পার্ক, সেপ্টেম্বর – মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি, অগাস্ট – সেন্ট কেভিন বোট শেড, সেপ্টেম্বর – ইআরা নদী, অক্টোবর – হেরিং আইল্যান্ড, নভেম্বর – রয়েল বোটানিক গার্ডেন, ডিসেম্বর – মায়ার মিউজিক বোল। সর্বশেষ পয়েন্টটি ছিল ফেডারেশন স্কোয়ার। যদিও রাস্তা বন্ধ থাকার কারনে কয়েকটা পয়েন্টে যাওয়া যায়নি, তবে অতিরিক্ত ৩/৪ কিলোমিটার পথ ঘুরে আসতে হয়েছে।
 
আগামী দিনগুলোতেও ঘুরুঞ্চি ম্যাগাজিন এ ধরনের আরো কর্মসূচির আয়োজন করবে।

পড়ুন সালাহউদ্দিন আহমদের আরো লেখা

 

ঘুরুঞ্চি ম্যাগাজিনের সকল কর্মকান্ড নট ফর প্রফিট, স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণে সকল কাজ পরিচালিত হচ্ছে।

অত্যন্ত ভরাক্রান্ত মনে জানাতে হচ্ছে যে আমাদের সম্মানিত লেখকদের জন্য কোনো তহবিল এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই। অদূর ভবিষ্যতে তহবিল গঠন করতে পারা গেল এই অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।

 

ঘুরুঞ্চির ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে আমাদের সপ্তাহে ৮-১২ ঘন্টা কাজ করতে হয়। বর্তমানে আমাদের কাজ শুধুমাত্র স্বেচ্ছাসেবক এবং স্ব-অর্থায়নের উপর নির্ভর করে। আপনারা ঘুরুঞ্চিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে, অনুদান দিয়ে, স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সাহায্য করতে পারেন।

ঘুরুঞ্চির ভ্রমণ ছবি ব্লগের ছবি থেকে আপনার পছন্দসই ছবি পেপার প্রিন্ট, ফাইন আর্ট প্রিন্ট, ওয়াল আর্ট এবং ডেস্ক আর্ট হিসাবে কেনার ব্যবস্থা রয়েছে। আপনারা ছবি কেনাকাটা করলে আমরা অল্প পরিমাণ কমিশন পাব, যা ঘুরুঞ্চির ক্রমবিকাশ এবং সম্প্রসারে ব্যাবস্থার হবে, যা ঘুরুঞ্চির ক্রমবিকাশ এবং সম্প্রসারে ব্যবহার হবে।

আমরা আপনার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ।