“এই দেশে তো কেউ যায়না, ওখানে কি আছে?”
এমন প্রশ্ন অনেক সময়ই শুনতে হয়। হাইতি, ইয়েমেন, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো, বুরুন্ডি মত এমন অনেকগুলো দেশে আমি গিয়েছি যেখানে খুব কম সংখ্যক পর্যটক যায়। কিছুটা রিস্ক নিয়েও চলাচল করা লাগে এমন অনেক জায়গায়।
একদম সত্যি বললে এটা কিছুটা সত্য যে থ্রিল থেকেও যাওয়া হয় – এমন দেশ যেখানে আমার সার্কেলের তেমন কাউ যায়নাই সেখানে যাচ্ছি, এই থ্রিল যে আছে এটা মেনে না নাওয়াটা হবে হিপোক্রিসি। আমার সার্কেলে কেউ করেনাই এমন কিছু আমিও করতে চাই। আর দুনিয়ার সব দেশ যেহেতু যেতে চাই তার মানে অন্য সব দেশ ও দেখতে চাই ইন শা আল্লাহ! কিন্তু এর চেয়ে আরো বড় দুটা কারন আছে:
১. কম পর্যটকের দেশে সাধারন জনগন পর্যটকদের খুব ভালবাসে এবং
২. এমন অনেক জায়গায় আমার ট্যুরিজমে অনেকের লাভ হতে পারে।


ভিরুঙ্গা ন্যাশানাল পার্কের একজন রেইঞ্জার এর এই ছবিটা আমি তুলেছিলাম ২০১৯ সালে। তখন দেশটার পুর্বাঞ্চলে চলছে যুদ্ধ, সাথে ইবোলা ভাইরাসের আউটব্রেক। এই রেইঞ্জাররা লোকালদের, পশুপাখিদের ও আমাদের মত পর্যটকদের নিরাপত্তা দেয়। আমরা ৫ জন নিরাগোংগো ভোলকেনো হাইকিং করছিলাম। আমাদের কে সিমান্ত থেকে পার্ক পর্যন্ত নিয়ে গেল ৮জন। ২জন একদম চুড়ায় এসে আমাদের সাথে রাতেও ছিল।
তাকে এই অবস্থায় একা পেয়ে সুখ-দু:খের অনেক আলাপ করলাম। এক পর্যায়ে বললাম – এত যুদ্ধ, এত সমস্যার মধ্যে আমাদের মত পর্যটকদের বিরক্ত লাগেনা? এই স্নোবিশ ট্যুরিস্ট এসে ঘেন ঘেন করবে, ফালতু কমেন্ট করবে, সেলফি তুলে চলে যাবে কিন্তু যুদ্ধ যুদ্ধের জায়গায় থাকবে। সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল – না আমরা চাই তোমরা আরো বেশি বেশি আস। আমাদের এই অঞ্চলে কোন কর্মসংস্থান নাই। যদি পার্কে চাকরি না পেতাম তাহলে আমিও এই যুদ্ধের কোন মিলিশিয়াতে জয়েন করতাম অথবা কোন মাইনিং ফিল্ডে নির্যাতিত হতে হতে কিছু টাকা পেতাম। তোমরা আসায় আমরা চাকরি পাই, আমরা থাকায় গ্রামবাসি একটু হলেও নিরাপদ থাকে।

গতকাল এক বড় ভাই এর সাথে কথা বলতে গিয়ে এই কথাপকথন মনে পরে। আমরা হাইকে উঠার আগে এক রেইঞ্জার আমাদের কে ব্রিফিং দিয়েছিল, যার নাম মনে আছে – জনপিয়ে (Jean-Pierre)। ২০২০ বা ২১ এ এক মিলিশিয়ার হামলায় ১২ জন রেঞ্জার মারা যায় যার মধ্যে জনপিয়ে ও একজন ছিল। ওই সময় কোভিডের কারনে ভ্রমন বন্ধ ছিল। এর পর এমনিও পার্ক বন্ধ করে ফেলা হয়। গত বছর ভোলকানো আবার এক্টিভ হয়ে যাওয়ায় সেটাও গেল!
এমন অনেক দেশ ও জায়গা আছে যেখানে আমার-আপনার ট্যুরিস্ট ডলারে একজনের জীবন আলোকিত হতে পারে। অন্যান্য অনেক জায়গায় ট্যুরিজম শুধুই একটা ইন্ডাস্ট্রি। অনেক কারনের একটা এটা যে কারনে এই দেশ গুলো ভ্রমন করতে চাই – কারন এতে করে একজনের জীবনেও একটা এফেক্ট রয়ে যায়।
বিশ্ব একটি বৈশ্বিক খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে, ৩৪৫ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যহীন। নানা অব্যবস্থাপনায় আফ্রিকার দেশগুলোর অবস্থা বেশ চরমে। অনেক অর্গানাইজেশন আফ্রিকার জন্য তহবিল সংগ্রহ করে থাকে। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী শিশুদের বেঁচে থাকা, সুরক্ষা এবং বিকাশের জন্য কাজ করে। নিচের লিংক গুলোতে গিয়ে অনুদান করার অনুরোধ রইলো। আপনি আপনার পছন্দের অর্গানাইজেশনের মাধ্যমেও অনুদান করতে পারেন।
Post Views: 52