আল-আকসা মসজিদের সাথেই, এক দেয়াল ধরে ইহুদীরা কান্নাকাটি করে। আমাদের অনেকে মাজারে গিয়ে যেমন কবর বা গিলাফ ধরে কাঁদে, মানত করে; তেমনই। তারা একে বলে কতেল। ইংলিশে The Wailing Wall, মুসলমানদের কাছে এর নাম বুরাখ দেয়াল।
 
বিশাল পাথরের খন্ড, এর উপরেই নাকি বোরাক নামের সেই আশ্চর্য ডানামেলা ঘোড়া নেমে এসেছিল। পাহাড়ের পাদদেশেকে কেন এরা দেয়াল’ বলে, কে জানে ! সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ একে স্লোপ বলে না ?
 
 সময়ের সাথে নিজেদের আধিপত্য যত বেড়েছে, ইসরায়েল এর অনেক পরিবর্তন করেছে। কিন্তু আধুনিকতার ছোয়া লাগায়নি মক্কা-মদীনার মত। সেকেলে ভাবই ধরে রেখেছে। এখন দেখতে একটা জেলখানা বিল্ডিং এর বিশাল দেয়ালই লাগে। আমার সময় তাই’ই লেগেছে আর কি।
 
বাংলাদেশী পাসপোর্ট নিয়েই আমি জেরুজালেম গিয়েছি। আল আকসা থেকে চাইলে আপনিও হেটে যেতে পারবেন। ইহুদীদের তীর্থস্থান হলেও, এটা একটা দর্শনীয় জায়গা। কিছু নিয়ম মানা লাগে পবিত্রতার স্বার্থে, এই যা !

আমার বান্ধবী বলেছিল দেয়ালেরও কান আছে, এই কথা ছড়িয়েছে এই দেয়াল থেকে। দেয়াল নাকি তাদের প্রার্থনা শুনে! সামনে প্লাস্টিকের চেয়ার বিছানো। অনেকে বসে তাওরাত পড়ে। আমার বান্ধবীই বলেছে, এই তাওরাত নাযিল হওয়া তাওরাত সেটা সে বিশ্বাস করে না। মুসা নবীর কাছে আল্লাহ পুরো ধর্মগ্রন্থ একটা মার্বেল পাথরের খন্ডে নাযিল করেছিলেন। ৫ খন্ডে, একসাথে, হিব্রু ভাষায়। অবশ্য নবীকে ৩০+১০ দিন এজন্যে তূর পাহাড়ে তপস্যা করা লেগেছিল। ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যানের সম্রাট নেবুচাদনেজ্জা যখন জেরুজালেম আক্রমণ করেন, ইহুদীরা এই তল্লাট থেকে প্রানে বেঁচে পালায়। ওজায়ের নামের এক নবীর বাবা, জেরুজালেম ছেড়ে পালানোর সময় মাটিতে গর্ত করে একটা কিতাব পুতে রেখেছিলেন। বহুদিন পরে যখন সে কিতাব খুজে পাওয়া গেল, তার প্রায় কিছুই পড়বার অবস্থায় ছিল না। যা কিছু পেয়েছেন, বাকিটা নিজের স্মৃতি থেকে বসিয়ে তিনি কিছু একটা দাড় করাবার চেষ্টা করেন। মূল তাওরাতে নাকি মূসা (আঃ) এর কিছু অলৌকিক ঘটনা, মৃত্যু বা তাঁর ভবিষ্যৎবানীর কোন কথাই ছিল না।

 এটাই এখন তাদের কিতাব। বান্ধবীর দাদি তাকে এটাই বলেছে। সে তাই বিশ্বাস করে। নিজে অবশ্য ধর্মের ধার ধারে না।
 
তুরস্কের টহল পুলিশ নাকি কয়েকবছর আগে, রাস্তায় গাড়ি তল্লাশীর সময় তাওরাত এর এক কিতাব উদ্ধার করেছিল। প্রত্নতত্ববিদরা পরে কার্বন ডেনটিং করে দেখলেন, সেই কিতাবের পাতার বয়স প্রায় ২৫০০ বছর ! তুরস্ক চোরাচালানের সাথে জড়িত ৫ জনকে আটকও করেছিল নাকি। চোরাচালানীদের আবার ধর্মের ভয় কিসের ?
এরপরের কাহিনী কি জানি না। তবে তুরস্কে গেলে, উসমানীয় শাসনামলের নিদর্শনের সাথে জাদুঘরে ইহুদীদের অনেক কিছুই দেখতে পাবেন। ইহুদীদের আমলে স্বর্নের ভালো প্রচলন ছিল।

আরো পড়ুন পেত্রা

 

জার্মানী থেকে ট্রেনে জেরুজালেম যাওয়া যায়। প্লেনও আছে। ভিসা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তারা পাসপোর্টে কিছু করবে না, একটা স্লিপ দিবে। মনে ভয় থাকলে, জর্ডান দিয়েও ঢুকতে পারেন। এরপর হেটে হেটে ইসরায়েল চলে গেলে, সাথে তাদের কেউ থাকলে কোন সমস্যাই নাই। আমি ইসরায়েলও গিয়েছি, দুইরাত ছিলাম। তাদের জাদুঘর, শিল্পকলার প্রদর্শনী ঘুরে দেখেছি। ঝা চকচকে উন্নত নগরী। এখন অবস্থা ভিন্ন হবার কথা।
 
পুরাতন ফাইল থেকে খুজে পাওয়া ছবি। কোনদিন বোমা ফালায়ে কি করে আল্লাহ মালুম …

পড়ুন রাকীব রেজার আরো লেখা

 

ঘুরুঞ্চি ম্যাগাজিনের সকল কর্মকান্ড নট ফর প্রফিট, স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণে সকল কাজ পরিচালিত হচ্ছে।

অত্যন্ত ভরাক্রান্ত মনে জানাতে হচ্ছে যে আমাদের সম্মানিত লেখকদের জন্য কোনো তহবিল এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই। অদূর ভবিষ্যতে তহবিল গঠন করতে পারা গেল এই অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে।

 

ঘুরুঞ্চির ওয়েবসাইট পরিচালনা করতে আমাদের সপ্তাহে ৮-১২ ঘন্টা কাজ করতে হয়। বর্তমানে আমাদের কাজ শুধুমাত্র স্বেচ্ছাসেবক এবং স্ব-অর্থায়নের উপর নির্ভর করে। আপনারা ঘুরুঞ্চিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে, অনুদান দিয়ে, স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে সাহায্য করতে পারেন।

ঘুরুঞ্চির ভ্রমণ ছবি ব্লগের ছবি থেকে আপনার পছন্দসই ছবি পেপার প্রিন্ট, ফাইন আর্ট প্রিন্ট, ওয়াল আর্ট এবং ডেস্ক আর্ট হিসাবে কেনার ব্যবস্থা রয়েছে। আপনারা ছবি কেনাকাটা করলে আমরা অল্প পরিমাণ কমিশন পাব, যা ঘুরুঞ্চির ক্রমবিকাশ এবং সম্প্রসারে ব্যাবস্থার হবে, যা ঘুরুঞ্চির ক্রমবিকাশ এবং সম্প্রসারে ব্যবহার হবে।

আমরা আপনার সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ।