নামটাই আৎকে উঠার মতো, দাঁতভাঙ্গা খুম। কেনো এই নাম , তা কেউ বলতে পারলো না। প্রথমে ভাবলাম খুমে যেতেই হয়তো দুই একটা দাঁত ভাঙ্গা পরবে। তারপরও সাহস নিয়ে রওনা দিলাম দাঁতভাঙ্গা খুমের উদ্দেশ্যে।
আসিফ ভাই বললেন, বান্দরবানে শহর থেকে কিছুটা আগেই কানা পাড়ায় ওনাদের একটা রিসোর্ট আছে, যেটা এখনও নির্মাণাধীন। পুরোপুরি প্রস্তুত হতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। আসিফ ভাই ওখানে যাবেন কাজের তদারকি করতে , কিছু দিন থাকবেন ওখানে। সাথে সাথে আমি ওনাকে বললাম, আমিও যেতে চাই ওনার সাথে, দুই/তিন দিন থাকবো। আসিফ ভাই সানন্দে রাজী হয়ে গেলেন। চলে গেলাম ওনার সাথে। ওনার কাছেই প্রথম শোনা আমার এই দাঁতভাঙ্গা খুমের কথা। রিসোর্টে ঘুরতে আসা ওনার কিছু বন্ধুদের সাথে ঘুরে এলাম এই খুম।
খুমে যাওয়ার কয়েকটি পথ আছে। এক , কানা পাড়া থেকে পুরোটা পাহাড়ি পথ ধরেই যাওয়া যায় খুমে। পথে কয়েকটি পাহাড় ঠিঙ্গিয়ে যেতে হবে। দ্বিতীয় পথ হলো, অনেকটা সহজ পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হবে সীতামুড়া পাড়া। সেখান থেকে নৌকা দিয়ে সাঙ্গু নদীর কিছুটা পথ পাড়ি দিয়ে সেখান থেকে অল্প কিছুটা পাহাড়ি পথ ও একটা ঝিরি ধরে সহজে যাওয়া যাবে দাঁতভাঙ্গা খুমে। আমরা দ্বিতীয় সহজ রাস্তা ধরেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম।
কানা পাড়ার রিসোর্ট থেকে সকালের নাশতা শেষে রওয়ানা হলাম। সাথে ১২/১৩ বছরের গাইড বাঙ্গাল , একজন তঞ্চৈঙ্গা বালক, যার এই পথ নখদর্পণে।
প্রায় ঘন্টা দেড়েক মোটামুটি সহজ পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে পৌছলাম সীতামুড়া, মারমাদের একটি পাড়ায়, সাঙ্গু নদীর পাড়ে। সেখান থেকে একটা নৌকা ভাড়া করে ১০/১৫ মিনিট সাঙ্গু নদী দিয়ে পৌছলাম ঠ্যাঙ্গার চর নামক একটা জায়গায়। সেখান থেকে আরো ২০/২৫ মিনিট পাহাড় পাড়ি দিয়ে পৌছলাম একটা ঝিরিতে, যার উৎপত্তি দাঁতভাঙ্গা খুম থেকেই।
ঝিরি পথে মিনিট বিশেক হাটার পরই আমরা পৌছে গেলাম দাঁতভাঙ্গা খুমে। সত্যিই খুমটি ভয়ংকর রকমের সুন্দর। মনে মনে ভাবলাম, পরিশ্রম সার্থক।
বিঃদ্রঃ খুমে ঘুরে আসার পর আমার দাঁত গুলো অক্ষতই আছে।
Post Views: 40