আবার চীনের দক্ষিণে গুয়াংজু (বিশেষত গুয়াংডং প্রদেশ ) কিংবা হংকং এলাকার ভাষাকে ক্যানটোনিজ ভাষা বলে। এটাও চীনের ভাষা। অনেকটা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম এর ভাষার মত। চট্টগ্রাম এর ভাষাকে কি বাংলা বলবেন নাকি ভিন্ন একটা ভাষা বলবেন? আর একটা মজার বিষয় হচ্ছে ম্যান্ডারিন ভাষা হচ্ছে দুই রকম। একটা পুরোন আর একটা সিম্পলিফাইড ভার্সন। অনেকটা বাংলা ভাষার সাধু এবং চলিত রূপ এর মত! ম্যান্ডারিন এর পুরোনো রূপ জটিল। তাই বর্তমানে অধিকাংশ জায়গায় সিম্পলিফাইড ভার্সনই ব্যবহার করা হয়।
ম্যান্ডারিন ভাষার সাথে পৃথিবীর বাকী ভাষাগুলোর একটা বিশাল পার্থক্য হল ম্যান্ডারিন হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র বেঁচে থাকা হাইরোগ্লিফিকস ভাষা। চিহ্ন দিয়ে লেখা ভাষা। এখনো বিভিন্ন চিহ্ন এঁকে তারা তাদের মনের ভাব প্রকাশ করে। প্রতিটা বিষয়ের জন্য এক একটা চিহ্ন রয়েছে। সেই চিহ্ন দিয়ে শুধু সেই বিষয়টাকেই বুঝাবে। এক একটা চিহ্নই এক একটা শব্দের মত! তাই হাজার হাজার চিহ্ন রয়েছে। আর ঠিক সে কারণেই চীনের ভাষা শিখাটা একটু কঠিন। আবার উত্তর-পূর্ব (এখন অবশ্য অনেক জায়গায়ই থাকে) চীনের মানুষ আমরা যাদের মাঞ্চু পিপল বলে জানি তাদের লিখিত রূপ সম্পূর্ণ ভিন্ন। মাঞ্চুদের লিখিত রূপ অনেকটা মঙ্গোলিয়ানদের লিখিত রূপ এর মত। মাঞ্চু ভাষাটা উপর থেকে নিচের দিকে (Verticle) পড়তে হয়! বাংলায় আমরা বাম থেকে ডানে পড়ি কিংবা আরবিতে ডান থেকে বামে পড়তে হয়। এই মাঞ্চু ভাষা ডান-বাম বাদ দিয়ে একদম উপর-নিচ পড়া শুরু করেছে! আগেই বলেছি মাঞ্চু স্ক্রিপ্ট মঙ্গোলিয়ান স্ক্রিপ্ট অনুসরণ করে যার প্রি-ইসলামিক উইঘুর স্ক্রিপ্ট (Pre-Islamic Uyghur script) এর সাথে সংযোগ রয়েছে। এই মাঞ্চু পিপলরাই চীন শাসন করেছে গত কয়েকশত বছর (Qing dynasty 1636-1912)। চীনের শেষ সম্রাট ছিল এই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মাঞ্চু (Manchu) থেকে। অনেকটা সে কারণেই তাকে উৎখাত করা সহজ হয়েছিল অন্যান্য কারণের সাথে। যদিও হান চাইনিজরা সেটা স্বীকার করতে চায় না আলাপ আলোচনায়।