পরিচিতজনেরা আমাকে একটা প্রশ্ন প্রায়ই করে থাকেন আর সেটি হলো আমার “প্রিয় স্থান কোনটি”?
 
আমার জন্য এই প্রশ্নের উত্তর দেয়া অনেক কঠিন। কাজের প্রয়োজনে (এবং ভ্রমণ করার জন্য) আমি অনেক দেশে ভ্রমণ করেছি। প্রত্যেক দেশেরই কোনো না কোনো জায়গা খুব সুন্দর থাকে, আলাদা বৈশিষ্ট্য থাকে। বৈচিত্র্য আর অভিজ্ঞতা একসাথে যুক্ত করলে আমার সব চেয়ে প্রিয় অভিজ্ঞতা ছিল ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গোর (পুর্ব ডিআরসি) নিয়িরাগংগো ভলকানোর চুড়ায় উঠে এক রাত থাকা। আমার ভ্রমণ করা ১০৯ দেশের মধ্যে এটাই জায়গাটিকে আমার প্রিয় স্থান বলা যায়।
২০১৯সালে ওই এলাকায় ইবোলা আউটব্রেক চলছিল, সাথে ছিল বিভিন্ন মিলশিয়াদের মধ্যে যুদ্ধ, মানে গৃহযুদ্ধ চলছিল। এখানে এসে মনে হয়েছিল ভিরুংগা ন্যাশানাল পার্কে  আমি আফ্রিকার শ্রেষ্ঠ ট্যুরিস্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার দেখেছিলাম। পার্ক রেইঞ্জাররা আকুতি করে বলেছিলো, আসবে আবার, অন্যদের বলো আসতে। এই এলাকায় বৈধ ইনকাম খুব কম, তোমরা না আসলে আমাদেরকেও মিলিশিয়াতে বা মাইনিং এ নামতে হবে।

কিন্তু পুর্ব ডিআরসি আর ভাল থাকল না, যুদ্ধের কারনে এবং রিপিটেড আক্রমনের কারনে এখন পার্ক বন্ধ, ওই এলাকার মানুষ থাকে অনেক আতংকে। এর উপর তাদের জাতিসংঘ পিস মিশনের প্রতি আছে প্রচন্ড রাগ। এক বাংলাদেশ ডাক্তারের সাথে কথা হয়েছিল যিনি কনফার্ম করেছিলেন যে আসলেই তারা জাতিসংঘ কে দেখতে পারেনা, রিপিটেড আক্রমনও হয় তাদের উপর। সে ডাক্তার নিজেও ওখানে শান্তিরক্ষা ফর্সে কর্মরত ছিলেন। 
 
নিয়িরাগংগো ভলকানোর চুড়ায় উঠতে লেগেছিল প্রায় ৬ ঘন্টার মত। রোয়ান্ডা থেকে পায়ে হেটে বর্ডার ক্রস করি, তারপর পার্কের গাড়িতে করে নিয়ে যায় আমাদের। ভিসার সব জটিলতা পার্ক কর্তৃপক্ষই ডিল করেছিল। আমার আফসোস একটাই যে গোরিলা ট্রেকিং এ ওইবার যাই নাই!