হাসান ইমরান, সুদান

যে মানুষটির জন্য সমকালীন আরবি সাহিত্য সৌদি আরব থেকে ইয়েমেন, আলজিরিয়া থেকে মরক্কো, নাইজিরিয়া থেকে সোমালিয়া পর্যন্ত গর্বে আপ্লুত হয়েছে, তিনি হলেন নোবেল পুরস্কার জয়ী একমাত্র আরবি সাহিত্যিক- প্রয়াত নাগিব মাহফুজ।

 

 

তার লেখা ‘কায়রো ট্রিলজি’ (Cairo Trilogy) এক অনন্য সাধারণ উপন্যাস। ‘মিররস’ (Mirrors) নামক একটি আধা-আত্মজীবনীমূলক উপন্যাসে মাহফুজ সনাতনপন্থী ইসলামিক ব্রাদারহুড দলের প্রধান সৈয়দ কুতুব-এর একটি নেতিবাচক চরিত্র এঁকেছিলেন। এরজন্য ১৯৯৪ সালে ঠিক তাঁর কায়রোস্থিত বাসভবনের বাইরেই পিঠে ছুরিকাঘাত করে মিশরের উগ্রপন্থী নেতাও ‘অন্ধ শেখ’ নামে কুখ্যাত ওমর আব্দুল রহমান-এর পোষ্য আততায়ীরা। পরে সেই যুবকদেরকে তার কাছে আনা হলে তিনি ক্ষমা করে দেন এবং তাদেরকে শাস্তি না দিতে রাষ্ট্রকে অনুরোধ জানান।

পরে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, তারা নাগিবের বইয়ের এক অক্ষরও পড়ে দেখেনি। ‘খান-আল-খলিলি’ কায়রোর আল-আজহার মসজিদের পাশে একটি বাজার, এই বাজারের অজস্র অলিগলি ও তাদের উপাখ্যানকে কেন্দ্র করেই নাগিব মাহফুজ লিখেছেন তাঁর ‘খান-আল-খলিলি’ উপন্যাসটি।

এই খান আল খলিলি বাজারেই অবস্থিত নাগিব মাহফুজ ক্যাফে। সেখানেই প্রিয় লেখক এসে বসেছেন ,চুমুক দিয়েছেন চায়ের পেয়ালায়,গল্প উপন্যাসের রূপকল্প এঁকেছেন। কায়রোতে এসে এই ক্যাফে না দেখে চলে যাব,তা কি করে হয়!

বেশ খানিকটা সময় বসেছিলাম ওখানে। এরমধ্যেই দশ- এগার বছর বয়সী দারুন হাসিখুশি একটি ছেলে এসে বই বিক্রি করতে চাইলো। ডাউনটাউন কায়রোর এক খন্ডচিত্র যেন উপস্থাপিত হল আমার কাছে এই ছেলেটির মাধ্যমে। কথা বলছিলাম ওর পরিবারের জীবন যুদ্ধ নিয়ে আর উপলব্ধি করার চেষ্টা করছিলাম নাগিবকে যিনি সারাজীবন অন্ধের দেশে আয়না বিলিয়ে গেছেন।